মৌলভীবাজারে ছয় শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ৬টা ১৫ মিনিটের সময় শহরের বেঙ্গল কনভেনশন হল থেকে একসাথে ২১ কিলোমিটার এবং ১০ কিলোমিটার দূরত্বের হাফ ম্যারাথন শুরু হয়। হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিছবাহর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মৌলভীবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সাকের্ল) মো: জিয়া উর রহমানসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা।
এই আয়োজনের নাম ‘বেঙ্গল কনভেনশন হল মৌলভীবাজার হাফ ম্যারাথন-২০২১’। মৌলভীবাজার রানার্স ক্লাব ও মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটি যৌথভাবে এই ম্যারাথনের আয়োজন করে। এই আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল মৌলভীবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
এবারের আয়োজনটা একটু ভিন্ন ছিল। কারণ এবারই এই ম্যারাথনকে উৎসর্গ করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানকে। মৌলভীবাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা এবং ভারত, নেপালের অনেক দৌড়বিদ এই ম্যারাথনে অংশ নেন।
তারা জানিয়েছেন, এবার দুই রকম দূরত্বে এই ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়। এর একটি ১০ কিলোমিটার দূরত্বের। এই দূরত্বের অংশগ্রহণকারীরা শহরতলির কমলগঞ্জ উপজেলার কালেঙ্গা বাজারের দক্ষিণ প্রান্ত ছুঁয়ে মৌলভীবাজার স্টেডিয়ামে ফিরেন। অপরটি ২১ কিলোমিটার দূরত্বের। এই দূরত্বের অংশগ্রহণকারীরা প্রেমনগর চা-বাগান থেকে মৌলভীবাজার স্টেডিয়ামে ফিরে আসেন।
প্রতিযোগিতায় ২১ কিলোমিটার দৌড়ে ছেলেদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন যশোরের আসিফ বিশ্বাস ও মেয়েদের মধ্যে প্রথম হন মৌলভীবাজারের নাসরিন বেগম। ১০ কিলোমিটার দৌড়ে ছেলেদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন কুলাউড়ার আশরাফুল আলম কাশেম, মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন সুনামগঞ্জের স্নেহা জান্নাত।
হাফ ম্যারাথনকে সুশৃঙ্খল, সুন্দর ও সফল করতে নিয়োজিত ছিলেন ১২০ জন স্বেচ্ছাসেবক। এক কিলোমিটার পর পর পানির বুথ, সড়কের বিভিন্ন মোড়ে দৌড়ের দিক-নির্দেশনা ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল ।
মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটির অ্যাডমিন ইমন আহমেদ বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে অনেকের মধ্যে নানা রকম বিষণ্নতা তৈরি হয়েছে। অনেকের মধ্যে স্থবিরতা এসেছে। এই অবসাদ, স্থবিরতাকে ভেঙে আবার সবাইকে চাঙা করে তোলাই এই ম্যারাথনের উদ্দেশ্য। এই জেলার সৌন্দর্য দেশ-বিদেশের পর্যটকদের সামনে তুলে ধরাও ম্যারাথনের অন্যতম একটা দিক। তবে এর সঙ্গে এবার যুক্ত করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে। সেই লক্ষ্যে এবার হাফ ম্যারাথনে মৌলভীবাজার জেলার ম্যাপের ভেতর বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধের ছবিসংবলিত টি-শার্ট ও মেডেল তৈরি করা হয়েছে।
সাইক্লিং কমিউনিটির আরেক অ্যাডমিন সঞ্জীব মীতৈ বলেন, ‘এবার হাফ ম্যারাথনের তৃতীয় আসর অনুষ্ঠিত হল। করোনার পর কয়েকটি লক্ষ্য নিয়ে আমরা এই হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করেছি। সেগুলো হলো মৌলভীবাজারের পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে তুলে ধরা, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দৌড়ের উপকারিতা প্রচার এবং জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে সবার সামনে উপস্থাপন করা।