বিশ্বের ১০০ দেশের সমন্বয়ে গঠিত গ্লোবাল ইয়ুথ পার্লামেন্টের ‘গ্লোবাল ইয়ুথ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ এর জন্য উদীয়মান নেতা ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপকমিটির সদস্য, স্কোয়াড্রন লীডার (অব.) সাদরুল আহমেদ খান।
তিনি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার উপজেলার প্রয়াত উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল লতিফ খানের পুত্র। তাকে জুরি বোর্ড বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য এ অ্যাওয়ার্ডে মনোনীত করেছে।
গ্লোবাল ইয়ুথ পার্লামেন্ট এর প্রোফাইল প্রকাশের পর সাদরুল আহমেদ খান বলেন, ‘যখন গ্লোবাল ইয়ুথ পার্লামেন্টে আমার ইনিশিয়েটিভ জমা দেই তারা আমার প্রোফাইলটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উদীয়মান রাজনৈতিক নেতাদের সাথে আমার প্রোফাইলটিও প্রতিযোগিতায় নেন। জুরি বোর্ড কঠোর বিচার বিবেচনা করে আমাকে উদীয়মান রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। আমি খুব গর্ববোধ করছি যে আন্তর্জাতিক একটা ফোরামে নিজের এবং দেশকে রিপ্রেজেন্ট করতে যাচ্ছি। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে উপস্থিত থেকে আমার পুরস্কার গ্রহণ করবো। বিশ্বের কাছে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করব।’
এই অ্যাওয়ার্ডে নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে সাদরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলেন তৃণমূল কর্মীই আওয়ামী লীগের প্রাণ। আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য হয়ে আমার নিজ এলাকা কুলাউড়া উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের মানোন্নয়নের গুরুত্ব আরোপ করি। আমার সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ আর জাতীয় সংসদে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে এলাকার তৃণমূল পর্যায়ে নিজের সাধ্যমতো কাজ চালিয়ে যাই। তবে চেস্টা করেছি কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার। আর এই কাজের জন্যই আন্তর্জাতিক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছি।
আমার কাজের জন্য এটা অবশ্যই একটা স্বীকৃতি, তবে সবচেয়ে বড় পাওয়া মানুষের ভালোবাসা। আর এটা সম্ভব হয়েছে আওয়ামী লীগের মতো ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলের ছায়াতলে কাজ করতে পারায়। আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি আমার সব উদ্যোগে নিজ মতামত দিয়েছেন। কিছুকিছু বিষয়ে সভাপতির সম্মতিও নিয়েছেন। সবমিলিয়ে এটা ছিল একটা টিম ওয়ার্ক, তাই আমার এই প্রাপ্তিটা সকলের।’
গ্লোবাল ইয়ুথ পার্লামেন্টের অন্যতম বিবেচ্য ছিল ডিজিটাল ইনিশিয়েটিভ। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছি। কুলাউড়া উপজেলায় আমরা এ পর্যন্ত ৫৮টি রোডশো আয়োজন করেছি। এই শোতে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ভিডিও চিত্র ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গ্রামের হাট বাজার, মাদ্রাসা-মন্দির প্রাঙ্গণে আমরা প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছি। এর মাধ্যমে গ্রামের সহজ সরল মানুষেরা সঠিক তথ্য পাচ্ছেন।’
গ্লোবাল ইয়ুথ পার্লামেন্টে সাদরুল সম্পর্কে বলেন, তিনি ‘তরুণ প্রজন্মের রাজনীতিবিদ, তৃণমূলের উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এক জোরদার কণ্ঠ। তিনি এবং তার দল মিলে এলাকার তৃণমূল মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয়ার নেশায় রত থাকেন। প্রত্যন্ত এলাকার নারী, শিশু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, ধর্মপ্রাণ মানুষদের জীবন মানোন্নয়নে নতুন নতুন উদ্যোগ নেন।’
তাকে গ্লোবাল ইয়ুথ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩-এ মনোনীত করার জন্য জুরি বোর্ড যেসব কর্মকাণ্ডগুলোকে নজরে রেখেছিল- তারমধ্যে অন্যতম হলো। ২১ ফেব্রুয়ারি কুলাউড়ায় ১০ কিমি দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন। ৮ মার্চ শরীফপুর ইউনিয়নে নারী দিবসে সম্মাননার আয়োজন। ২৬ মার্চ চাতলাপুর চা বাগানে স্বাধীনতা দিবস ব্লাড ক্যাম্পের আয়োজন। ১৮ মার্চ শিশু দিবসে রাউৎগাঁও ইউনিয়নে শিশু দিবস চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন।
ভূকশিমইল ইউনিয়ন হাকালুকি হাওরে সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন। বিভিন্ন ইউনিয়নে রমজান মাসে ইফতার বিতরণ, ঈদের কাপড় বিতরণ, পূজায় বিভিন্ন মণ্ডপে ও বড়দিনে গীর্জাসমূহ পরিদর্শন। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কুলাউড়া উপজেলাব্যাপী নিমগাছ রোপণ। সীতাকুণ্ড ট্রাজেডিতে কর্মধা ইউনিয়নের নিহত অলিউরের পরিবারকে সহায়তা। কুলাউড়া উপজেলার বন্যাদুর্গত ইউনিয়ন সমূহে বন্যার্থ মানুষের জন্য ত্রাণ বিতরণ।
কুলাউড়ায় বন্যার্ত আশ্রয়কেন্দ্র সমূহে শুকনো খাবার বিতরণ ও রুটি তৈরি করে বিতরণ। কুলাউড়ায় বন্যার্ত আশ্রয়কেন্দ্রে নারী স্বাস্থ্য উপকরণ ও শিশু খাদ্য বিতরণ। বন্যা পরবর্তী সময়ে বন্যার্ত ইউনিয়ন সমূহে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প ও ওষুধ বিতরণ। ৫ আগস্ট থেকে ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ডিজিটাল প্রদর্শনী। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কুলাউড়া উপজেলার হাট বাজারে ৫৮টি রোডশো। কুলাউড়া উপজেলার সকল ইউনিয়নে শীতকালীন শাকসবজীর বীজ বিতরণ। ৬ ও ৭ ডিসেম্বর কুলাউড়া উপজেলার শত্রুমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে সবকটি ইউনিয়নে একযোগে পতাকা উত্তোলন, উন্মুক্ত দৌড়ের মাধ্যমে বিজয় র্যালি ও মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননার আয়োজন এবং সর্বশেষ ১৬ ডিসেম্বর কুলাউড়া উপজেলার চা বাগান সমূহে শিশু সমাবেশের আয়োজন।
দলের ও দেশের প্রতি দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, এ ভাবমূর্তিকে অক্ষুণ্ন রাখতে আমি ও আমার টিমের সবাই একসঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক তৃণমূলের উন্নয়নের জন্য দ্বিগুণ উদ্যোমে কাজ চালিয়ে যাব।