মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়ন থেকে মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী জুনাব আলীর স্ত্রী দিলারা বেগম গত চার সপ্তাহ থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। স্বামীর পরিবারের লোকজন দিলারাকে অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেন তার ভাই আব্দুল কালাম। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনসহ স্থানীয় লোকজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার না পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের দারস্থ হয়েছেন তিনি।
আবুল কালাম উরফে কুটন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, তার ছোট বোন দিলারা বেগমের স্বামী সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকেন। তাদের সংসারে দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামীর বাড়ির লোকজন যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে আসছেন। তাদের টাকায় বিদেশ যান জুনাব আলী। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার পরও যৌতুক চাওয়া বন্ধ হয়নি। দিলারাকে চরিত্রহীন সাজাতে পরিকল্পিতভাবে ভিডিও বানিয়ে সেই ভিডিও তার স্বামীর কাছে পাঠানো হয়। তা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে জুনাব আলী স্ত্রীর নামে তালাকনামা পাঠিয়ে দেন।
বিষয়টি নিয়ে গত ১৮ মে এলাকায় শালিস বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে দিলারা বেগমকে তার ভাশুর (স্বামীর বড় ভাই) আইয়ুব আলী, আকবর আলী ও আজবর আলীর জিম্মায় রাখা হয়। কিন্তু গত ৩ জুন রাত ১১ টায় দিলারা বেগমকে মারপিট করে অজ্ঞাতস্থানে লুকিয়ে রাখেন ভাশুরেরা। আমি বিষয়টি এলাকার লোকজনকে জানিয়ে কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
পূর্ব টাট্রিউলি এলাকার সাবেক মেম্বার রশিদ মিয়া, পঞ্চায়েত কমিটির সেক্রেটারি জালাল মিয়া, ইউনুছ মিয়া, জসিম মিয়া সর্দার, আব্দুল হান্নান, মছলু মিয়া ও নজরুল ইসলাম জানান, দিলারা বেগমকে তার ভাশুর (স্বামীর বড় ভাই) আইয়ুব আলী, আকবর আলী ও আজবর আলীর জিম্মায় দেওয়া হয়েছিলো। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান মেম্বারসহ বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে। কিন্তু এর আগে হঠাৎ করে গৃহবধু দিলারা বেগমকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একটি পক্ষ বিষয়টির সমাধান করতে চায় না।
এদিকে অভিযুক্ত আইয়ুব আলী, আকবর আলী ও আজবর আলী জানান, আমরা আলাদা বাড়িতে থাকি। দিলারাকে আমরা জিম্মা নিতে রাজি হইনি। আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য কুটন মিয়া তার বোনকে আত্মগোপন করে রেখেছেন। এখন নাটক সাজাচ্ছে। দিলারা বেগমকে উদ্ধার করলে বিষয়টির আসল রহস্য উদঘাটন হবে।
কুলাউড়া থানার এসআই পরিমল চন্দ্র দাস (ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা) জানান, বিষয়টি তিনি তদন্ত করছেন। মামলা এখনও নথিভুক্ত করা হয়নি। নিখোঁজ গৃহবধূকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চলছে।