কুলাউড়া উপজেলার লস্করপুর গ্রামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও জ্বা’কে আটক করেছে পুলিশ। বিয়ের মাত্র ৭ মাসের মাথায় গৃহবধূকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো স্বামীর বাড়ীর লোকজন । গৃহবধূর পিতার বাড়ীর লোকজনের তৎপরতা ও লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ গৃহবধূর স্বামী কামরুল ইসলাম ও স্বামীর ভাবি আছমা বেগমকে আটক করেছে এবং থানায় হত্যা মামলা রুজু করেছে। নিহত সেবিনা আক্তার রুলী (১৯) উপজেলার গাজিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের মেয়ে।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৭ মাস পূর্বে রুলীকে কুলাউড়া পৌর এলাকার মৃত ছত্তার আলীর পুত্র কামরুল ইসলাম (২৭) এর সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় স্বামীর চাওয়া উপহারের সব দাবী পূরণ করা হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামীর বাড়ীর লোকজনের অত্যাচার শুরু হয় রুলীর উপর। এভাবে কিছুদিন চলার পর রুলীর স্বামী কামরুল জড়িয়ে পড়েন তার ভাবী আছমা বেগমের সাথে পরকীয়ায়। এতে রুলী বাধা দিলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে।
গত ১ মাস পূর্বে এ নিয়ে স্বামীর বাড়ীতে বসে সালিশ বৈঠক। বৈঠকে জনপ্রতিনিধি, সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে দু’পক্ষের মধ্যে আপোষ মীমাংসা করে দেন। মীমাংসা হওয়ার কিছুদিন পর রুলী তার চাচাতো ভাইয়ের বিয়েতে পিতার বাড়ীতে আসে।
কয়েকদিন পিতার বাড়ীতে থাকার পর স্বামীর বাড়ীতে রুলীকে নিয়ে যান রুলীর চাচা রেনু মিয়া। গত ২৯ ফেব্রুয়ারী (বৃহস্পতিবার) রুলীকে হত্যা করে স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে ফোন করা হয় স্বামীর বাড়ীর পক্ষ থেকে। কিন্তু রুলীর সমস্থ শরীতে আঘাতের চিহ্ন দেখে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয় । পুলিশ ১লা মার্চ (শুক্রবার) লাশ উদ্বার করে পোষ্ট মর্টেম করে এবং গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় স্বামী কামরুল ইসলাম ও স্বামীর ভাবি আছমা বেগমকে আটক করে।
নিহত রুলীর মা ফাতেমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ৬-৭ লক্ষ টাকা খরচ করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। রুলীর সুখের আশায় ঋণ করে এ টাকা খরচ করে বিয়ে দিয়ে তরতাজা মেয়েকে পাষন্ড স্বামী, স্বামীর ভাবি আছমা বেগমসহ স্বামীর বাড়ীর অন্যান্য লোকজন তার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। তিনি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়েছেন।
কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) ক্যশৈনু জানান, নিহত গৃহবধুর পরিবারের অভিযোগে কুলাউড়া থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এঘটনাশ গৃহবধূর স্বামী ও স্বামীর ভাবীকে আটক করা হয়েছে।
Related