বিভিন্ন মামলার আসামী কুলাউড়ার মুহিদুর রহমান শাওন এখনোও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। পুলিশ বলছে, শাওনকে ধরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
মুহিদুর রহমান শাওন কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের নর্তন গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী মধু মিয়ার ছেলে। স্থানীয় এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সাথে সে জড়িত।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাতে কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের তিলাশীজুড়া গ্রামে রবিরবাজার সড়কে ব্রিজের উপর উপজেলার ব্রাহ্মনবাজার ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আছদ্দর আলীর ছেলে তৌহিদুল হায়দার (৩৬) কে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্য হামলা চালানো হয়। পরে এ ঘটনায় ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে অভিযুক্ত করে মামলা (নং-১৮, ২০/১২/২০২৩) দায়ের করেন হামলার শিকার তৌহিদুল হায়দার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, তৌহিদুল হায়দার একজন ব্যবসায়ী। তাঁর কয়েকটি হারভেস্টার কমবাইন্ড (ধান কাটার) মেশিন রয়েছে। তিনি বিভিন্ন জায়গায় মেশিন ভাড়া দিয়ে থাকেন। ঘটনার এক সপ্তাহ পূর্বে মুজাহিদুল ইসলাম হারভেস্টার মেশিন ভাড়া নিতে আসলে তৌহিদুল হায়দার মেশিন ভাড়া না দেয়ায় তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে চলে যায় মুজাহিদুল। এই ঘটনার জেরে ১৮ ডিসেম্বর রাতে সিএনজি যোগে তৌহিদুল ইসলাম নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সিএনজি গতিরোধ করে তৌহিদুল হায়দারের ওপর হামলা চালায় নর্তন গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী মধু মিয়ার ছেলে মুহিদুর রহমান শাওন (২৫), একই এলাকার ইসমাইল আলীর ছেলে মুজাহিদ ইসলাম (২৭), ও মানিক মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (৪১) সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন যুবক। এসময় তৌহিদুল হায়দারের সাথে থাকা ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় হামলাকারীরা। হামলায় গুরুতর আহত তৌহিদুল হায়দার প্রথমে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পুলিশ মামলার আসামী মুজাহিদুল ইসলাম ও রুবেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরন করে। আর অন্যতম আসামী মুহিদুর রহমান শাওন পুলিশী ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যান।
এদিকে কুলাউড়া থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে চার্জশিট আদালতে প্রেরণ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এস আই মোঃ আমির উদ্দিন। সম্প্রতি আদালত মামলার অন্যতম আসামী মুহিদুর রহমান শাওনের উপর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এদিকে চলতি বছরের ২৫ মার্চ রাজনগর থানার মাথিউরা চা বাগান এলাকায় কুলাউড়া-মৌলভীবাজার সড়কে রাজনগর উপজেলার হাজীনগর চা-বাগান এলাকার বাসিন্দা মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে মোঃ জলিল মিয়া (৩৮) এর উপর পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলা চালায় নর্তন গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী মধু মিয়ার ছেলে মুহিদুর রহমান শাওন ও একই এলাকার মানিক মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া। হামলায় গুরুতর আহত জলিল মিয়া প্রথমে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এই ঘটনায় মুহিদুর রহমান শাওন ও রুবেল মিয়াকে অভিযুক্ত করে রাজনগর থানায় মামলা (নং-১৭, ২৮/০৩/২০২৪ইং) দায়ের করেন হামলার শিকার জলিল মিয়া।
এদিকে হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হলে মামলা তুলে নিতে তৌহিদুল হায়দারকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন মুহিদুর রহমান শাওন ও রুবেল মিয়া। পরে নিরাপত্তাহীনতার কারণে গত ২০ মার্চ মৌলভীবাজার সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন তৌহিদুল হায়দার। এদিকে মুহিদুর রহমান শাওনের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার সদর থানায় আরেকটি মামলা (নং-১৩৮/২৪ইং) দায়ের করেন আমির আলী নামের আরেক ব্যক্তি।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানায় প্রতারণা ও মারামারির ঘটনায় মুহিদুর রহমান শাওনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে আসামী মুহিদুর রহমান শাওনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
কুলাউড়া থানার এস আই মোঃ আমির উদ্দিন বলেন, পলাতক আসামী শাওনকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।