বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
কুলাউড়ায় জামায়াতের নায়েবে আমির ও সেক্রেটারির শপথ গ্রহণ কানাডায় নিজ জন্মস্থান কুলাউড়ার নামে গাড়ির প্লেট নাম্বার করে প্রশংসায় ভাসছেন প্রবাসী মুন্না বিপ্লব ও সংহতি দিবসে স্কটল্যান্ড বিএনপির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত আজারবাইজানে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন শুরু কুলাউড়ায় ইয়াবাসহ ২ ভাই আটক নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কুলাউড়ার সাধারণ সম্পাদক রুমেল গ্রেপ্তার কুলাউড়ায় জামায়াতের নতুন আমির অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিম জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মৌলভীবাজার বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও সমাবেশ কুলাউড়ায় জালনোট প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা কুলাউড়ায় প্রশাসনের উদ্যোগে দখলমুক্ত ফুটপাত, মানুষের স্বস্তি 

সিলেটে গ্রেফতারের পর সাবেক ছাত্রদল নেতা হয়ে গেলেন যুবলীগ নেতা

কেবিসি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট : শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪
{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"source_ids":{},"source_ids_track":{},"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"square_fit":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

ফিনল্যান্ড প্রবাসী বিএনপি নেতা সাজ্জাদুর রহমান মুন্না গত ২৩ সেপ্টেম্বর দেশে আসেন। অথচ তাকে ৪ আগস্ট সিলেটের চারাদিঘীরপাড় এলাকায় গুলি-বোমা হামলার অভিযোগে গত ৩০ অক্টোবর বুধবার রাত ১১টায় শিবগঞ্জের সোনাপাড়াস্থ নিজের (নবারুণ-২) বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে পেপ্রণ করা হয়। শুনানী শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত। বর্তমানে তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। মামলার বাদি সিলেট নগরীর ১৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য সচিব আলাল আহমদ জানিয়েছেন, মামলার এজাহারে ভুলবশত সাজ্জাদুর রহমান মুন্নার নাম এসেছে। গ্রেফতারের পরদিন সকালে খবর পেয়েই তিনি মুন্নার সঙ্গে দেখা করেছেন, দু:খ প্রকাশ করেছেন। তিনি তাঁর মামলার এজাহার থেকে সাজ্জাদুর রহমান মুন্নার নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করবেন।
জানা গেছে, সাজ্জাদুর রহমান মুন্না কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের চকেরগ্রামের বাসিন্দা হীরা মিয়ার ছেলে। তিনি কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও ফিনল্যান্ড বিএনপির সদস্য।
সাজ্জাদুর রহমান মুন্নার ভগ্নিপতি সারোয়ার খান জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফিনল্যান্ডে ছিলেন। চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফেরেন। গ্রেফতারের দিন রাতে বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই নিজের বাসায় অবস্থান করছিলেন। ফিনল্যান্ড থাকাবস্থায় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। আওয়ামী সরকার বিরোধী আন্দোলন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলননে প্রবাসীদের জনমত গঠনে সেখানকার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
মামলার এজাহার মতে, ৪ আগস্ট বিকেলে সিলেট নগরীর চারাদিঘীরপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় দ-বিধির ১৪৮/১৪৯/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১১৪/৩৪ পেনালকোড ১৮৬০ তৎসহ ১৯০৮ সনের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের ৩/৪ ধারায় এ মামলাটি দায়ের করেন নগরীর চারাদিঘীরপার আল আমিন-৬৪ আবাসিক এলাকার হাবিব উল্লাহ’র ছেলে ও ১৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য সচিব আলাল আহমদ (৪৫)। মামলা নং ০৬ (০৯)২০২৪)। সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে দায়ের হওয়া এ মামলায় ১১৮জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলারই ১১৬ নং আসামি সাজ্জাদুর রহমান মুন্না (৩২)। মামলায় তার রাজনৈতিক পরিচয় দেয়া হয়নি, পিতা অজ্ঞাত রেখে নবারুণ-২, সোনারপাড়া, থানা- শাহপরাণ ঠিকানা দেখানো হয়।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলননের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নগরীর নয়াসড়ক পয়েন্টে বিএনপির নেতাকর্মী ও ছাত্রজনতা অবস্থান নেন। এসময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আসামিরা বাদিসহ উপস্থিত ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে ঘটনাস্থল চারাদিঘীরপাড় জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় আসতে থাকেন। ১নং আসামির হুকুমে আসামিরা দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা গুলি শুরু করেন এবং ককটেল ও হাতবোমা মারেন। এতে বাদি ও সাক্ষীসহ জনতা আহত হন। আসামির আরেক দফা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকা ত্যাগ করলে বাদিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে বাদির চোখে অপারেশন করা হয়। কিন্তু চোখের উন্নতি না হওয়ায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষ বাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে সাজ্জাদুর রহমান মুন্নার পরিবার জানিয়েছে, নবারুণ আবাসিক এলাকায় বাসার রাস্তা নিয়ে প্রতিবেশি কুলাউড়ার ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলামের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে এ নিয়ে অনেক হয়রানীর শিকার হয়েছেন মুন্না ও তার পরিবার। এর জেরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মুন্নাকে এই মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার করানো হয়েছে বলে ধারণা করছেন তাঁর পরিবার।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি ও যুবদল নেতা আলাল আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চোখে গুলি বের করা হলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারিনি। আসামিদের সবাইকে চিনিনা। বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ হয়েছে। এরমধ্যে ভুলবশত সাজ্জাদুর রহমান মুন্নার নামও এজাহারে এসেছে। গ্রেফতার হওয়ার পর তার পরিচয় জেনে কোর্টহাজতে তার সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানিয়েছি, দু:খ প্রকাশ করেছি। তার পরিবারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। মামলার এজাহার থেকে সাজ্জাদুর রহমান মুন্নার নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করব। তিনি বলেন, নিরপরাধ কাউকে হয়রানীর উদ্দেশ্যে মামলা না করতে দলের নির্দেশনা রয়েছে। মামলায় যদি ভুলবশত নিরপরাধ কাউকে আসামি করা হয়-জানলে অবশ্যই তাকে বাদ দেওয়া হবে।
গ্রেফতারের পর গণমাধ্যমকে বিএনপি নেতা মুন্নাকে ফিনল্যান্ড যুবলীগের সহ-সভাপতির তকমা কারা দিল- এমন প্রশ্নের জবাবে বাদি বলেন, নিশ্চয়ই কোনো ষড়যন্ত্রকারী সাংবাদিকদের এই ভুল তথ্য দিয়েছে। সাংবাদিকদের কারা এ তথ্য জানিয়েছে তা খবর নিলেই জানতে পারবেন।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক জানান, গোপন তথ্যের মাধ্যমে মামলার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এজাহারেতো আসামির রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। পুলিশও কোনো গণমাধ্যমকে আসামির রাজনৈতিক পরিচয় দেয়নি।
এদিকে হয়রানীমূলক মামলায় ফিনল্যান্ড বিএনপি নেতা সাজ্জাদুর রহমান মুন্নাকে গ্রেফতারে দলীয় হাইকামান্ডের কাছে প্রতিকার চাওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবরে প্রতিকার চেয়ে প্রেরিত এই চিঠিতে সাক্ষর করেন ফিনল্যান্ড বিএনপির সভাপতি কামরুল হাসান জনি ও সাধারণ সম্পাদক জামান সরকার।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রবাসী জীবনের শুরু থেকেই সাজ্জাদুর রহমান মুন্না ফিনল্যান্ড যুবদল, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ ফিনল্যান্ড শাখা, জিয়া পরিষদ ফিনল্যান্ড শাখা ও ফিনল্যান্ড বিএনপির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত এবং দলের বিভিন্ন দায়িত্ব সক্রিয়ভাবে পালন করে আসছেন। অথচ ফিনল্যান্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি পরিচয়ে ও বিস্ফোরক মামলার মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মুন্নাকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে যা আইনের শাসন, ন্যায় বিচার ও মানবাধিকারের পরিপন্থী। ফিনল্যান্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি পরিচয়ে ও বিস্ফোরক মামলার মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মুন্নাকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে যা আইনের শাসন, ন্যায় বিচার ও মানবাধিকারের পরিপন্থী। ষড়যন্ত্র ও সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করায় ফিনল্যান্ডের বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা হতবাক হয়েছেন। চিঠিতে ফিনল্যান্ড বিএনপির পক্ষ থেকে সাজ্জাদ মুন্নার বিরুদ্ধে বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তার নিঃশর্ত মুক্তির ব্যবস্থা নিতে এবং স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের ঘটনা আড়াল করতে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।

সূত্রঃ দৈনিক শ্যামল সিলেট

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ | কেবিসি নিউজ ফ্রান্স
Theme Developed BY NewsFresh