‘ঘরো আমার দুই বাচ্চা বড়, শীতের রাইত একটি কম্বল দিয়ে কাটাইতে অইতো। এখন আরেকটা কম্বল পাইছি বসুন্ধরার পক্ষ থাকি। আমার বাচ্চাইনতে এখন আরামে শীতের মাঝেরাতে ঘুমাইতে পারব।’
বসুন্ধরা গ্রুপের দেওয়া কম্বল উপহার পেয়ে কথাগুলো বলছিলেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কৌলারশি গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর সোয়াব আলী (৫০)। তাঁর মতো ৩৫০ জন শীতার্তের মাঝে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় কম্বল বিতরণ করেছে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) পৌর শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণী অনুষ্ঠানে শুভসংঘ কুলাউড়ার সভাপতি উপাধ্যক্ষ মো. জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি মাহফুজ শাকিলের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় ও ভূমি এবং গৃহহীন মানুষকে ঘর দিয়েছেন। করোনার সংকটের সময় সরকারের পক্ষ থেকে কর্মহীন অসহায় মানুষকে খাদ্য ও অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় বসুন্ধরা গ্রুপ যেকোনো দুর্যোগের সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সরকারের পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপও অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের মতো অন্যরাও এগিয়ে আসলে অসহায় মানুষের দুঃখ লাঘব হবে।
হাড় কাঁপানো শীতের কষ্টের সময়ে মুখে হাসি ফুটল ময়মনসিংহের শতাধিক পথশিশু এবং এতিমখানার শিশুদের মুখে। শনিবার দুপুরে নগরীর কেওয়াটখালী এলাকায় আত-তাবীব মাদরাসা ও এতিমখানায় এসব শিশুর হাতে কম্বল তুলে দেওয়ার পর শিশুরা খুশিতে উচ্ছ্বাসিত হয়ে ওঠে। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়। কালের কণ্ঠ শুভসংঘ ময়মনসিংহের বন্ধুরা এ কাজে সহযোগিতা করেন। আত-তাবীব এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা মিজানুর রহমান বলেন, এতিমখানার শিশুরা কম্বল পাওয়ায় তাঁরা বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞ। মাদরাসা ও এতিমখানার পক্ষ থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য তাঁরা দোয়া করছেন।
বয়সটা ঠিক কতো জানে না লতা বিবি। তবে শরীরের অবস্থা দেখে মনে হলো বয়স কম করে হলেও সত্তর ছাড়িয়ে যাবে। তার বাড়ি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সংলগ্ন কেওয়াটখালি রেলওয়ে বস্তিতে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ লতা বিবি, কথাও বলতে পারছে না ঠিকমতো। তারপরও ছুটে এসেছেন তীব্র শীতে একটু উষ্ণতার খোঁজে। তার মতো আরো দেড় শতাধিক অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে খুঁজে বের করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা শুভসংঘের বন্ধুরা।
বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে ওইসব মানুষের হাতে তুলে দেওয়া কম্বল। লতার মতো এসব সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো কম্বল পেয়ে অনেক খুশি। শুভসংঘের বন্ধুদের তারা জানান শীতের লাইগা তাদের আর কষ্ট হইত না।