মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
কুলাউড়ায় জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন কুলাউড়ায় বেড়া দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ, ১৫ দিন ধরে গৃহবন্দি প্রবাসী পরিবার কুলাউড়া হাসপাতালের নতুন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন কাতারে মৌলভীবাজার জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কুলাউড়া পৌর ছাত্রদল নেতা রাজ ও ইব্রাহিম কাতারে মৌলভীবাজার জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন কুলাউড়ার মনসুর কাল আসছেন মুফতি আমির হামজা কুলাউড়া পৌর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে গৃহস্থালী কাজের ময়লা সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন মৌলভীবাজারে ছাত্রশিবিরের শীতবস্ত্র বিতরণ প্রকাশিত সংবাদের সাথে ভিন্নমত পোষন করলেন প্রবাসী মাহমুদ আলী গাজী মারুফের মৃত্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের শোক

কুলাউড়ায় বেড়া দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ, ১৫ দিন ধরে গৃহবন্দি প্রবাসী পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৫

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের কিয়াতলা গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে বসতবাড়ির চলাচলের রাস্তায় বাশের বেড়া দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যারকারণে ১৫ দিন ধরে গৃহবন্দি রয়েছে এক প্রবাসী পরিবার। প্রতিবাদ করায় উল্টো ওই প্রবাসী পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় আহত প্রবাসীদের মাতা কুলাউড়া উপজেলা হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ ও গৃহবন্দি থেকে মুক্তির দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন কিয়াতলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত আরমান আলীর ছেলে মহিব উদ্দিন কনর মিয়া নামের এক ভুক্তভোগী। এদিকে টেলিকনফারেন্সে বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী কনর মিয়ার ছেলে পর্তুগাল প্রবাসী রুহুল আমীন রুবেল।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী মহিব উদ্দিন কনর মিয়া বলেন, আমার চার ছেলে প্রবাসে থাকেন। তাদের মধ্য রুহুল আমীন রুবেল ও নুরুল আমিন পর্তুগালে, খায়রুল আমিন জুবের ও আল-আমিন দুবাইতে থাকেন। সেই সুযোগে আমার বড়ভাই মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিনের সাথে আমাদের বাড়ির দক্ষিণ দিকে চলাচলের রাস্তা নিয়ে দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। ওই রাস্তা দিয়ে আমার পরিবারসহ এলাকার আরো কয়েকটি পরিবারের লোকজন চলাচল করতেন। পূর্ব শত্রুতার জেরে আমার ভাতিজা জালাল উদ্দিন গং কয়েকদিন যাবৎ ওই রাস্তা দিয়ে আমাদের চলাচল করতে বাধা নিষেধ করে। প্রতিবাদ করলে জালাল উদ্দিন বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে। আমার ছেলেরা প্রবাসে থাকার সুযোগে জালাল উদ্দিন গং বিভিন্নভাবে আমার পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর দুপুরে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় অন্যায়ভাবে জালাল উদ্দিন আমাকে অশ্লীলভাবে গালিগালাজ করে। প্রতিবাদ করায় জালাল উদ্দিন ও তার স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার, ছেলে আফনান আমাকে মারধর করার চেষ্টা করে। এসময় আমার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে আমি রক্ষা পাই। পরে জালাল উদ্দিন গং আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে গত ৪ জানুয়ারি আমাদের বাড়িতে কাদিপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতিকের উপস্থিতিতে রাস্তা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সালিশি বৈঠক হয়। বৈঠকে বিরোধপূর্ণ রাস্তা বন্ধ করা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হলে সিদ্ধান্ত হয় রাস্তাটি অবমুক্ত করার। কিন্তু ওই বৈঠকে জালাল উদ্দিন অজুহাত দেখিয়ে অনুপস্থিত থাকেন। পরে ওই বৈঠকে আমাদের পরিবারকে গৃহবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু জালাল উদ্দিন ওই সিদ্ধান্ত অমান্য করে উল্টো আমার সাথে বিরোধিতা করে। বর্তমানে জালাল উদ্দিনের ভয়ে চরম আতঙ্কে ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন, সরেজমিনে তদন্ত করে আমাদেরকে গৃহবন্দি থেকে মুক্তি দিয়ে বাড়ির চলাচলের রাস্তাটি যেন অবমুক্ত করে দেয়া হয়। ওই বিরোধের জেরে ১৩ জানুয়ারি দুপুরে জালাল উদ্দিন, তার স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার ও ছেলে আফনান আমার স্ত্রী খয়রুন নেছাকে রাস্তায় একা পেয়ে মারধর করে আহত করে। পরে তাকে কুলাউড়া হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাই।
সংবাদ সম্মেলনে মহিব উদ্দিন কনর মিয়ার ভাতিজা শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, বিরোধপূর্ণ ওই রাস্তা দিয়ে আমার চাচা কনর মিয়ার পরিবার ও জালাল উদ্দিনের পরিবার চলাচল করেন। কিন্তু পূর্ব শত্রুতার জেরে জালাল উদ্দিন অন্যায়ভাবে কিছুদিন পূর্বে ওই রাস্তার পাশে বাঁশ ও নেটের বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন এটা কোন অবস্থাতেই ঠিক হয়নি। অথচও ওই রাস্তার পাশে মাত্র সাড়ে চার শতক জমি রয়েছে জালাল উদ্দিনের। আর রাস্তার উভয় পাশে আব্দুল মালিক মাস্টারের উত্তরসূরি তারা মিয়া গং ১৯ শতক, সালিকুর রহমান গং ২৪ শতক ও নজরুল ইসলাম গং সাড়ে ৪ শতক জমি রয়েছে। তাহলে জালাল উদ্দিন কিভাবে কোন স্বত্ত্বমূলে ওই রাস্তার একক মালিকানা দাবি করেন। আমরা চাই উভয় পরিবার যেন ওই রাস্তা দিয়ে সবসময় শান্তিপূর্ণভাবে চলাচল করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জালাল উদ্দিন বলেন, রাস্তাটি আমাদের পারিবারিক। ওই রাস্তাটি আমি তৈরি করেছে। উল্টো প্রতিপক্ষরা আমার রাস্তাটি জোরপূর্বক দখল করে চলাচল করতে চাচ্ছে। তাই আমি বাঁশের বেড়া দিয়ে রেখেছি।

কুলাউড়া থানার এএসআই মানিক মিয়া বলেন, অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা বন্ধ করার সত্যতা পেয়েছি। ওইসময় জালাল উদ্দিনকে অনুরোধ করি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বাঁশের বেড়াটি অপসারণ করে রাস্তাটি অবমুক্ত করার জন্য এবং পরবর্তীতে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করা হবে বলে বলা হলে জালাল উদ্দিন কথা রাখেননি। বিষয়টি আমি ওসি স্যারকে জানিয়েছি। এখন আইনগতভাবে বিষয়টি দেখা হবে।

এ বিষয়ে কাদিপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতিক বলেন, দীর্ঘদিনের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সালিশি বৈঠকে করে সমাধানের চেষ্টা করেছি কিন্তু জালাল উদ্দিনের অসহযোগিতার কারণে বিষয়টির সমাধান হয়নি। #

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ | কেবিসি নিউজ ফ্রান্স
Theme Developed BY NewsFresh