নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দল থেকে বহিষ্কৃত নেতাকর্মীদের বরাবরের মতই আবারও দলে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। বিশেষ করে সংসদ উপনির্বাচন, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচন এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী বহিষ্কৃত প্রার্থীদের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে। একই সাথে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় দলীয় কোন্দল ও দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্যও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ও নীতি নির্ধারণী মহলের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, তাদের দল থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে বহিষ্কার করা হয়নি, দলীয় পদচ্যুত করা হয়েছে। পদচ্যুত বা বহিষ্কৃতদের মধ্যে যারা দলীয় শৃঙ্খলা ও আদর্শের পক্ষে কাজ করবেন, যারা সভানেত্রীর নির্দেশ মেনে চলবেন তাদের পুনরায় পদ দেওয়ার বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগ সর্ববৃহৎ, প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। অসংখ্য ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মী রয়েছেন এই দলে। তাই যেকোনো নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী নির্বাচন করতে আগ্রহী হয় এবং দলীয় মনোনয়ন না পেলেই তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়। তাদের স্থানীয়ভাবে সাময়িক বহিষ্কার করা হলেও পরবর্তীদের তাদের কার্যকলাপের উপর ভিত্তি করে দলে ফিরিয়ে নেওয়ারও নজির রয়েছে। তাই বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে হয়তো সভানেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন তাদের বিষয়ে।
সূত্র জানিয়েছে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই ক্ষমা করে দেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মনোনীত নৌকার প্রার্থীর চেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল বেশি। সেই কারণে দলের সাংগঠনিক অবস্থা আরো জোরদার করার লক্ষ্যে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিদ্রোহীদের ক্ষমা করে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
একাধিক কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা জানান, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে সারা দেশে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তারা অনেকেই দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। কেউ ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক কিংবা সম্পাদকম-লীর পদে। আবার কেউ ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে। দীর্ঘদিন দলের দুঃসময়েও তারা সঙ্গে ছিলেন। দলের কাছে মনোনয়নও চেয়েছিলেন, কিন্তু নৌকা তো দেওয়া হবে একজনকে। তাহলে বাকিরা কী করবেন। সেক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক না পেয়ে অনেকেই রাগ-অভিমান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীকেই অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চিহ্নিত করেন। বিদ্রোহীদের জয়জয়কার হওয়ায় ইতোমধ্যে অনেককেই উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি কিংবা বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। আবার কাউকে কাউকে অব্যাহতি কিংবা পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Related