সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
জলবায়ু সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ২৫ হাজার কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি কুলাউড়ায় যুবলীগের সহ সভাপতি রূহুল আমিন আটক ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যার ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরা হলো জলবায়ু সম্মেলনে কুলাউড়ায় অবৈধভাবে মাটি কাটার দায়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা- ১৪ টি যানবাহন জব্দ  বড়লেখায় উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সম্মেলন অনুষ্ঠিত কুলাউড়ার অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি গ্রামপুলিশদেরও ভূমিকা রাখতে হবে – অতি: পুলিশ সুপার কামরুল হাসান বাংলাদেশ এসোসিয়েশন কার্ডিফ এর উদ্যোগে কুলাউড়ায় বন্যার্থদের মধ্যে নগদ অর্থ প্রদান তরুণ সংবাদকর্মী সুনিমের প্রবাস যাত্রা উপলক্ষে সম্মাননা প্রদান কুলাউড়ায় বোরো চাষের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাঁধ

কুলাউড়ার কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান আজাদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ, ১০ ইউপি সদস্যের অনাস্থা

কুলাউড়া প্রতিনিধি
  • আপডেট : শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৩

কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপ-ব্যবহার, ইউনিয়নের নির্বাচিত সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ এবং সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ এনে পরিষদের ১০ জন ইউপি সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। এই বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বুধবার (৪ জানুয়ারী) জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের কাছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন ওই ১০ ইউপি সদস্য। যার অনুলিপি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া আসনের সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার বিভাগ মৌলভীবাজারের উপ-পরিচালক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উথাপনকারী সদস্যরা হলেন- সংরক্ষিত ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য মাহমুদা আক্তার, ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য রায়না বেগম, ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য নাজমিন নাহার দিলারা,১ নং ওয়ার্ডের সদস্য দিদারুল আলম দিদার, ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল কাদির, ৩ নং ওয়ার্ডের সিলভে স্টার পাঠাং, ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য মুজিবুল হক হারুন, ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য হেলাল আহমদ, ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ দরছ মিয়া ও ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য লক্ষ্মী নারায়ন অলমিক।
জানা যায়, কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান আজাদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পরিষদের মেম্বারদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ শুরু করেন। নানা অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বানাচ্ছেন বাড়ি, কিনেছেন গাড়ি। গত ১৯ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদে ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান (২) হেলাল আহমদের সভাপতিত্বে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ১০ জন মেম্বার চেয়ারম্যান আজাদের বিরুদ্ধে ৮ টি বিষয়ে দুর্নীতির সুস্পষ্ট অভিযোগ উত্থাপন করে অনাস্থা প্রস্তাবের সিদ্ধান্ত নেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জন্মনিবন্ধনে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আত্মসাৎ, ভূমি হস্তান্তর কর ১ শতাংশের টাকা আত্মসাৎ, সরকারী অর্থে ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব ভূমিতে নির্মিত অগ্রণী ব্যাংক ভবনের নিচতলা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া একক ক্ষমতায় ভেঙ্গে সরকারি অর্থের ক্ষতিসাধন করে দোকান কোটা ভাড়া দিয়েছেন, মহিলা সদস্যদের সাথে অশোভন আচরণ, গৃহ করের সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ, এলজিএসপি প্রকল্পের প্রকল্প চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার হলেও চেয়ারম্যান কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে পুরো টাকা কৌশলে আত্মসাৎ করছেন। ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের টাকা আত্মসাৎ, স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠনে অনিহা করণসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে।
ইউপি সদস্যরা অভিযোগ বলেন, আমরা নির্বাচনের সময় জনগণের কাছে ওয়াদা করেছিলাম আমাদের সাধ্যনুযায়ী এলাকার উন্নয়নে কাজ করবো। কিন্তু বর্তমান স্বেচ্ছাচারী চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তাঁর আসল চেহারা প্রকাশ হতে থাকে। জন্মনিবন্ধনের অর্থ তাঁর নিজস্ব লোক নজরুল ইসলাম কায়েছকে দিয়ে আদায় করেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত দুই লাখ ৮৯ হাজার টাকা আদায় করা হয়। ইউনিয়নে কোন বরাদ্দ আসলে চেয়ারম্যান আমাদের সাথে কোন আলোচনা কিংবা রেজুলেশন না করে নিজের ইচ্ছামাফিক কাজ করেন। গৃহ করের প্রায় ১৫-২০ লক্ষ টাকার সিংহভাগ তিনি আত্মসাৎ করেন। ভূমি উন্নয়ন কর ১ শতাংশের প্রথম কিস্তিতে ২ লাখ ও দ্বিতীয় কিস্তিতে ৩ লাখসহ মোট ৫ লাখ টাকা চেয়ারম্যান গ্রহণ করে ভূয়া প্রকল্প গ্রহণ করে টাকা আত্মসাৎ করেন। ইউনিয়ন পরিষদ সহায়তা তহবিলের কাজ নিজের পছন্দের লোককে ঠিকাদার বানিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন। এছাড়া এলজিএসপি বরাদ্দকৃত অর্থ সদস্যদের নামে ভূয়া মাস্টার রোল বানিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন।
কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান আজাদ জানান, অভিযোগের বিষয় শুনেছি। মেম্বারদের আনীত অভিযোগগুলো সঠিক নয়। তবে মেম্বারদের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। মেম্বাররা বিক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বিভিন্ন কারণে তবে এতে উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। মেম্বারদের শতভাগ দাবিদাওয়া পূরণ করা সম্ভব নয়। একটা প্রকল্প পেলে সে ব্যাপারে সরকারের কাছেও জবাবদিহিতা করতে হয়। ইউনিয়নের প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নের রেজুলেশন ও মাস্টার রোল আছে।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ হাসান বলেন, অনাস্থা প্রস্তাবের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ | কেবিসি নিউজ ফ্রান্স
Theme Developed BY NewsFresh