কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেছেন, আমাদের দেশে এখন সরকারি কোনো অফিসের দরজা একদম বন্ধ থাকে না। ভিক্ষুক থেকে শুরু করে যে কেউ আমাদের দপ্তরে ঢুকতে পারে যে কোনো কাজের জন্য আবেদন নিবেদন করতে পারে। এমনকি প্রবাসীরাও প্রবাসে থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আমাদের কাছ থেকে সেবা নিচ্ছেন। প্রবাসী ভাই বা তাদের পরিবার যেকোন প্রয়োজনে আমার অফিসে আসলে শুধুমাত্র স্বাক্ষরের সময় নেয়া হয়।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে কুলাউড়া পৌর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে আয়োজিত কালেরকন্ঠ শুভসংঘ কুলাউড়া উপজেলা শাখার আয়োজনে প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন ইউএনও। তিনি বলেন, রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অবদান রয়েছে আমাদের সামগ্রিক অর্থনীতিতে। সম্প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির ক্ষেত্রে প্রবাসীদের কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রবাসে থাকায় অনেকে এনআইডি কার্ড আগে করেনি। এখন দেশে আসার পর তাঁর জন্ম নিবন্ধন কার্ড করতে হচ্ছে, পরে এনআইডি কার্ড তৈরি করে নিতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এনআইডির সাথে পাসপোর্টের ডিটেইলস না মিলায় সাময়িক জটিলতা হচ্ছে এটা স্বীকার করছি। কিন্তু ইচ্ছাকৃত ভাবে এই কাজে বিলম্ব হচ্ছে না ।
বিভিন্ন অফিসে হয়রানি শিকার হওয়া প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখন যদি কেউ কোথাও কোনো হয়রানির শিকার হোন তাহলে সাথে সাথে আমার কাছে চলে আসেন। সবকিছু ডিজিটালাইজড হওয়ায় আগের মতো তো এতো দীর্ঘ প্রক্রিয়া নেই। আমি তাঁর কাঙ্ক্ষিত ডকুমেন্টসটি ছবি তুলি হোয়াটস আপে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাঠাই । পাশাপাশি ফোন দিয়ে দ্রুত সময়ে করে দেয়ার জন্য ফোন দিয়ে দিই। যাতে করে অনেকে দ্রুতসময়ের মধ্যে সেবা পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, প্রবাসী ভাইদের জন্য আমাদের নির্দেশনা দেয়াই আছে যে, আমরা সর্বোচ্চ সার্ভিস তাদের দিবো। এখানে কোনো ধরনের বিচ্যুতি ঘটবে না। কোনো বিলম্ব ঘটবে না। এটা আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি ।
সম্প্রতি সময়ে ঘটা সড়ক দূর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে ইউএনও বলেন, সড়ক দূর্ঘটনার প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের টার্নিং পয়েন্ট, আর অদক্ষ চালক । প্রতি দশজনে নয় জন চালক ভাইয়ের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তাদের জন্য আমাদের আইন আছে আমাদের উদ্যোগ আছে সবকিছুই আছে । তবে আমি মনে করি, এলাকার জনগন যদি এগিয়ে আসেন তাহলে এই আইন প্রয়োগ থেকে সার্বিক কর্মকান্ড ও যানজট দূর করা অনেকাংশে সহজ হবে । জেল জরিমানার থেকেও আমাদের যে সচেতন জনগোষ্ঠী আছে তারা যদি একতাবদ্ধ হয়ে প্রসাশনের সহায়তা চান তাহলে সমস্যা আর থাকবে না।
তিনি বলেন, আমরা চাই এমন জনগোষ্ঠী গড়ে ওঠুক যারা লাইসেন্সবিহীন গাড়িতে উঠবে না , আগে লাইসেন্স দেখে গাড়িতে চড়লে আইন প্রয়োগ সহজ হবে এবং দূর্ঘটনার হার অনেকটা কমবে। জনগন যদি সচেতন হয়। তবে এর থেকে বড় প্রতিকার বা যুদ্ধ নেই।
ইউএনও বলেন, আমরা আসলে যখন যেখানেই কাজ করি সেটাই আমাদের বাড়ি হয়ে যায়। আমি এই এলাকার উন্নয়নেই কাজ করবো । প্রত্যেকটা কাজই কিন্তু পৃথিবীকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আয়োজক সংগঠনের উপজেলা শাখার সভাপতি উপাধ্যক্ষ মোঃ জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন রিপনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুছ ছালেক, কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ গিলমান, নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আমির হোসেন, কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম আতিকুর রহমান আখই, কালের কণ্ঠ প্রতিনিধি মাহফুজ শাকিল।
অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য দেন কুলাউড়া ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ইউকে’র সাবেক সভাপতি ফারুক উদ্দিন আহমদ সুন্দর, মৌলভীবাজার ডিষ্ট্রিক এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনক্’র সাবেক সভাপতি সৈয়দ জুবায়ের আলী, কুলাউড়া ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন কাতারের সাবেক সভাপতি মোঃ শাজান মিয়া, কুলাউড়া বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব ইউএসএ ইনক্ এর সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমদ, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আজিজুল হক স্বপন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুমেল আহমদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আল সালোক, সাংগঠনিক সম্পাদক আজহার মুনিম শাফিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জুয়েল, প্রচার সম্পাদক মিফতা আহমদ রাফি, ক্রীড়া সম্পাদক খায়রুল ইসলাম রুমেল আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক কামরুল ইসলামসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।