মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
জিসাস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হলেন কুলাউড়ার কায়ছল ইসলাম কুলাউড়ায় উরসের নামে অশ্লীলতা বন্ধের দাবি এলাকাবাসীর কুলাউড়ায় ছাত্রদল নেতা সালমানের জন্মদিন পালন কুলাউড়ায় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা – সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সকলে মিলে কাজ করার আহবান পুলিশের  দীর্ঘ দিনের কোন্দলের অবসান ঘটিয়ে কুলাউড়া বিএনপির ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার কুলাউড়ায় ২৭ প্রতিবন্ধী পেল ঠিকানা ফাউন্ডেশনের হুইল চেয়ার কুলাউড়ায় উৎসবমুখর পরিবেশে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত   মৌলভীবাজারে ছাত্রশিবিরের সাথী শিক্ষাশিবির সম্পন্ন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্বরণে কুলাউড়া সরকারি কলেজ স্বরণসভা কুলাউড়ায় মানব পাচারকারীর বাড়ি থেকে  শিশুসহ ৮ নারী-পুরুষ আটক

দেউলিয়া হওয়ার পথে বেসিক ব্যাংক

কেবিসি নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট, ২০২১

নিয়ম ভেঙে দেওয়া ঋণ আদায় করতে পারছে না রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক। শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর মেয়াদকালে বিতরণ করা ঋণই ব্যাংকটিকে দেউলিয়ার পথে নিয়ে যাচ্ছে।

মৃতপ্রায় ব্যাংকটির বর্তমান আর্থিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। ব্যাংকটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে অব্যাহতভাবে কয়েক হাজার কোটি টাকা তহবিলের যোগান দেওয়ার পরও ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে খেলাপির শতকরা হিসাবে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে বেসিক ব্যাংক। মার্চ শেষে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণের স্থিতি ছিল ১৪ হাজার ৬০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৮ হাজার ৮০ কোটি ৭২ লাখ টাকা। যা বিতরণ করা ঋণের ৫৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

ডিসেম্বরে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৭ হাজার ৫০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ তিন মাসে ব্যাংকটির ৫১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭২ কোটি টাকায়।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড নামের ব্যাংকটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। প্রতিষ্ঠার পরের দুই দশক দেশের সেরা ব্যাংক হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছিল বেসিক ব্যাংক। ২০০৯ সাল পর্যন্ত বেসিক ব্যাংককে তুলনা করা হতো বৈশ্বিক জায়ান্ট স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সঙ্গে। কিন্তু শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর নেতৃত্বে লুটপাটের শিকার হয়ে এখন ব্যাংকটি মৃতপ্রায়।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সুশাসন না থাকাতেই একসময়ের ভালো ব্যাংক এখন সবচেয়ে খারাপ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংককেও এর দায় নিতে হবে। ব্যাংকটিতে অনিয়মের পেছনে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ব্যাংকটির তথ্য বলছে, গত আট বছরে নিট লোকসান হয়েছে ৩ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। এ সময়ে সরকার করের টাকা থেকে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা দিয়েছিল ব্যাংকটিকে। তারপরও ১ হাজার ৭২ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে ব্যাংকটি। পাশাপাশি ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ৩ হাজার ৫৬৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

শুধু তাই নয়, প্রতিযোগিতায় তলানিতে পড়ে থাকা ব্যাংকটির ৭২টি শাখা ও ২ হাজার ১০০ কর্মীর পেছনেও সরকারের খরচ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আনিসুর রহমান বলছেন, ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের বড় অংশ এখনও আদায় করা যায়নি। তবে আমরা খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছি।

জানা গেছে, ২০০৯-২০১৩ তথা শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর আমলে ব্যাংকটি থেকে অন্তত সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে বেসিক ব্যাংকের নিট লোকসানের পরিমাণ ৩৬৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। ২০১৯ সালে ব্যাংকটির নিট লোকসান ছিল ৩২৬ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গতবছরে শেষে সবগুলো রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ ছিল, তার মধ্যে বেসিক ব্যাংক এককভাবে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ খেলাপি ঋণের জন্য দায়ী ছিল।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারও ব্যাংকটিকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। অর্থমন্ত্রণালয় থেকে ব্যাংকটিকে বাঁচানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫০০ কোটি টাকা কমিয়ে সাত হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।

এ ছাড়া বেসিক ব্যাংকের সঙ্গে অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) একীভূত করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ | কেবিসি নিউজ ফ্রান্স
Theme Developed BY NewsFresh