মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের দক্ষিণ দানাপুর জামে মসজিদের সাবেক কমিটির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রসঙ্গে ভিন্নমত পােষণ করেছেন মসজিদের সাবেক কমিটির সদস্যরা। এ বিষয়ে গত ৯ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি মো: রমজান আলীসহ ৭ জন ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি আবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। যার অনুলিপি অফিসার ইনচার্জ কুলাউড়া থানা ও চেয়ারম্যান জয়চন্ডী ইউপিকে দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ দানাপুর জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির মেয়াদউত্তীর্ণ হওয়ার কারণে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মসজিদ প্রাঙ্গণে এলাকার সর্ব সাধারণর উপস্থিতিতে আব্দুল লতিফকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তখন সাবেক কমিটির সভাপতি মো: রমজান আলী ও সাধারণ সম্পাদক ছাদকুর রহমানের কাছ থেকে মসজিদের সকল হিসাব-নিকাশসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি বুঝিয়া পান আহবায়ক কমিটি। এসময় বিগত কমিটির ওপর আহবায়ক কমিটির কোন অভিযােগ ছিল না। কিন্ত আহবায়ক আব্দুল লতিফের সহযােগিতায় কােটাগাঁও গ্রামের মো: আব্দুল মােমিন মাস্টারসহ ৫ জন স্বাক্ষর দিয়ে ইউএনও বরাবর একটি অভিযােগ দেন। অথচ, আহবায়ক কমিটি গঠনকালে আব্দুল মামিন মাস্টার উপস্থিত ছিলেন এবং সভার রেজুলেশনে তাঁর স্বাক্ষর রয়েছে। কমিটি গঠনের সময় তিনি কােন আপত্তি করেননি। তিনি দানাপুর পঞ্চায়েতের মান সম্মান ক্ষুণ করার জন্য এলাকার কয়েকজন লােককে নিয়ে মিথ্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। আব্দুল মােমিন মাস্টার ও উত্তর লস্করপুরের সুফিয়ান আহমদ মসজিদ ও পঞ্চায়েতের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা, পঞ্চায়তর মধ্য বিভাজন তৈরি করার জন্য অভিযােগ তুলছেন। মসজিদে এখন পর্যন্ত সরকারি কােন অনুদান আসেনি। মসজিদে নাকি সরকারি বরাদ্দ এসেছে বলেছেন এবং এই টাকা কে বা কারা আত্মসাৎ করেছে এসব অপপ্রচার চালানাে হচ্ছে ।
মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি মো. রমজান আলী জানান, দীর্ঘদিন থেকে আমাদের মসজিদ অত্যান্ত সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ হলে আহবায়ক কমিটি গঠন করে হিসাব নিকাশসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি তাদরকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এ সংক্রান্ত একটি রেজুলেশন তাদের স্বাক্ষর আছে। ওই সময় তারা কােন আপত্তি উত্তাপন করেননি। তিনি আরো বলেন, দানাপুর পঞ্চায়েতের মান সম্মান নষ্ট করার জন্য একটি বিশেষ মহল নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আব্দুল মােমিন মাস্টার তার নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য এক হাতে ৫ জনের স্বাক্ষর দিয়ে একটি মনগড়া অভিযােগ করেছেন ইউএনও মহােদয় বরাবর। তাদের আনীত অভিযােগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণােদিত। আমরা চাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতের সবার সহযােগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মসজিদ পরিচালনার জন্য সুন্দর একটি কমিটি গঠন।
এ বিষয় আব্দুল মােমিন মাস্টার জানান, আমাদের বিরুদ্ধে মসজিদ কমিটির সাবেক কমিটির সদস্যদের আনীত অভিযােগ সঠিক নয়। আমরা বিগত কমিটির হিসাব-নিকাশ গড়মিল পেয়েছি। তাই আমরা পঞ্চায়েতের ৯০ জন সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে ইউএনও মহােদয় বরাবর লিখিত অভিযােগ দিয়েছি। তদন্ত করলে সব সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খােন্দকার জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযােগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, জয়চন্ডী ইউনিয়নের দানাপুর জামে মসজিদের আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযােগ তুলেন পঞ্চায়েতের লােকজন। এ নিয়ে গত ৩ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযােগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. আব্দুল মােমিন মাস্টার, সুফিয়ান আহমদ, আলফু মিয়া, মো. রুবেল মিয়া, ওয়ারিছ মিয়াসহ ৯০ জন ব্যক্তি।