মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বেলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মোছা. খোদেজা আক্তার সম্প্রতি নিজের কৃষি জমির খাজনা পরিশোধ করতে জায়ফরনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। সরকারি হিসেবে ১১.২৫ শতক জমির সর্বশেষ খাজনা ২৪ টাকা বকেয়া ছিল। কিন্তু বকেয়া পরিশোধের সময় তহশিলদার তার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেন।
রবিবার (২১ মে) অতিরিক্ত টাকা ঘুষ হিসেবে নেয়ায় ভুক্তভোগী খোদেজা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করেছেন।
অভিযোগকারী খোদেজা জানান, গত ১৬ মে জায়ফরনর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তার ভূমির কর দিতে গেলে তহশিলদার মুজিবুর রহমান খাজনা বাবদ তার কাছে ৫০০ টাকা দাবি করেন। খোদেজা মানুষের বাড়িতে কাজ করে এবং সে একজন দরিদ্র মানুষ এটা বললেও কোন লাভ হয়নি। পরে সে বাধ্য হয়ে ৫০০ টাকা দিলে তাকে মোট ২৪ টাকার রশিদ দেন তহশিলদার মুজিবুর রহমান।
তখন তিনি মনে করেন ২৪ টাকার উপরে ওই অতিরিক্ত টাকা তহশিলদার ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন। খোদেজা তার অতিরিক্ত টাকাটি ফেরত চান এবং আর কেউ যেন কর দিতে গিয়ে ঘুষ না দিতে হয় সে জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে সে আবেদনে এ বিষয়টি দাবি করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জায়ফরনর-সাগরনাল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে করদাতারা অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ নিয়মিত করে আসছেন। ঘুষ ছাড়া তিনি কর গ্রহণ করেন না।
সম্প্রতি উপজেলার কাশিনগর গ্রামের হারুনুর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, আমি গত ১৬ মে কর দিতে গেলে মুজিবুর রহমান আমার ৪৭৪ টাকা করের বিপরীতে ১১শ’ টাকা দাবি করে। অতিরিক্ত টাকা না দিলে খাজনা নেবেন না বললে বাধ্য হয়ে ১১’শ টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু আমাকে রশিদ দেন সেই ৪৭৪ টাকার।
জুড়ী উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব তাজুল ইসলাম বলেন, জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দীর্ঘদিন থেকে ঘুষ বাণিজ্য চলছে। তবে আমরা যদি প্রমাণসহ এর সত্যতা পাই তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মাধ্যমে ওইসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাব।
অভিযুক্ত মুজিবুর রহমান ঘুষ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কারও কাছ থেকে কখনও অতিরিক্ত টাকা নেই না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, খাজনার রশিদে যা তাই পরিশোধ করতে হয়। কোন অবস্থায় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিধান নেই। এ অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।