আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে ভারতীয়
হাই কমিশনের আয়োজনে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর চা বাগানে
যোগ দিবস পালিত হয়েছে। আজ বুধবার সকালে এই দিবসটি পালিত হয়। সকাল ৯
ঘটিকায় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার শ্রী নীরাজ কুমার জায়সওয়াল এর
উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়।
অনুষ্ঠানের ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনার একটি স্বাগত ভাষণ দিয়েছেন। তিনি
যোগের গুরুত্ব ও তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, যোগ
বলতে আমরা সাধারণত রাজযোগ বুঝে থাকি। রাজযোগকে আট ভাগে ভাগ করা যায় যথা :
যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, ধ্যান, ধারণা ও সমাধি। যম বলতে
অহিংসা, সত্য, অন্ত্রেয়, অচৌর্য, ব্রহ্মচর্য এবং অপরিগ্রহকে বোঝায়। এ যম
ধারা চিত্তশুদ্ধ হয় এবং দেহ, মন ও আত্মা আনন্দে ভরে ওঠে। অন্য কোনো
প্রাণীকে ক্ষতি না করাকে অহিংসা বলে। অহিংসা অপেক্ষা মহত্তর কোনো ধর্ম
নেই। সত্যের মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের কর্মের ফল লাভ করে থাকি।
এ সত্যের ভেতর থেকে সব কিছু পাওয়া যায়। সবকিছু সত্যেই প্রতিষ্ঠিত। চুরি
বা বলপূর্বক অন্যের জিনিস গ্রহণ না করাকে অন্ত্রেয় বলে। কায়মনোবাক্যে
সর্বদা সব অবস্থায় পবিত্রতা রক্ষা করাকে ব্রহ্মচর্য বলে। অপরের দান গ্রহণ
না করাকে অপরিগ্রহ বলে। নিয়ম শব্দের অর্থ নিয়মিত অভ্যাস বা ব্রত পালন।
অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক সব ধরনের শৌচই সাধনের জন্য প্রয়োজন।
অনুষ্টানে অলক তালুকদার অনুষ্ঠানে যোগের বিভিন্ন কার্যক্রম এবং
প্রদর্শনী করেন। অন্যন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সহকারী
হাইকমিশনের দ্বিতীয় সচীব মানস কুমার মোস্তাফী, কুলাউড়া সাংবাদিক সমিতির
সাধারন সম্পাদক সাইদুল হাসান সিপন, চা শ্রমিক নারী নেত্রী গীতা রানী কানু
প্রমুখ।
ইতিহাসবিদরা বিশ্বাস করেন যে, সিন্ধু নদীর তীরে সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতার
আগে থেকেই যোগ ব্যায়াম অনুশীলনের অস্তিত্ব ছিল। পতঞ্জলি নামক একজন
ভারতীয় ঋষি, যোগ অনুশীলনের বিকাশ করেছিলেন। বিশ্ব এখন পতঞ্জলিকেই যোগ
ব্যায়ামের জনক বলে মনে করেন।
১৮৯০ সাল পর্যন্ত, যোগ ব্যায়াম শুধুমাত্র ভারতে জনপ্রিয় ছিল। স্বামী
বিবেকানন্দ, একজন দার্শনিক ও সন্ন্যাসী, যোগ ব্যায়ামকে বিশ্বের সাথে
পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এটিকে “মনের বিজ্ঞান” বলে অভিহিত করেছিলেন।
ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালের জাতিসংঘ সাধারণ
পরিষদের ভাষণে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের পরামর্শ দিয়েছিলেন। যেখানে ১৭৭টি
সদস্য রাষ্ট্র প্রস্তাবটিকে সমর্থন করেছে। ২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস
হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল।
এরপর ২০১৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ইয়োগা দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে।