মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার
ইউনিয়নের হিঙ্গাজিয়া বাজারের ব্যবসায়ীর মোটরসাইকেল চুরি ও একাধিক চুরির
মামলার আসামী আলমগীর হোসেন উল্টো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ
ওঠেছে। আলমগীর হোসেন পুলিশী তদন্ত বাঁধাগ্রস্ত করতে ও ভুল তথ্য দিয়ে
সাংবাদিক সম্মেলন করে উল্টো হিঙ্গাজিয়া বাজারের ব্যবসায়ীদের নানা হয়রানী
করছে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা হিঙ্গাজিয়া
বাজারে গত বুধবার রাত ৯টায় এক প্রতিবাদ সভা ও সংবাদ সম্মেলন করে আলমগীরের
নানা অপকর্মের বিষয় তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলের মালিক ও বাজারের ব্যবসায়ী মানিক
মিয়া জানান, গত ২৯ মে হিঙ্গাজিয়া বাজার থেকে তাঁর ব্যবহৃত বাজাজ ডিসকভার
১২৫ মোটরসাইকেলটি চুরি করে নিয়ে যায় চুরেরা। পরে তিনি কুলাউড়া থানায়
অজ্ঞাতদের অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত
করে দক্ষিণ হিঙ্গাজিয়ার বাসিন্দা ও পূর্বে একাধিক চুরি মামলার আসামী
আলমগীরের ট্রলি চালক রুবেল মিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশের কাছে
রুবেল স্বীকার করে আলমগীরের নেতৃত্বে আমার মোটরসাইকেলটি চুরি করা হয়। পরে
পুলিশ চালক রুবেলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। এদিকে আলমগীর
চুরির সাথে তাঁর সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আমাকে বিভিন্ন
মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছে। একপর্যায়ে আমাকে ও আরো কয়েকজনকে হুয়রানির জন্য
আদালতে আলমগীর তার স্ত্রীকে দিয়ে মামলা করে। এতেও সে ক্ষান্ত হয়নি।
সাংবাদিকদের ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশী তদন্ত
বাধাগ্রস্ত ও আমাদের মান সম্মান ক্ষুন্ন করার নানা পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে।
মানিক মিয়া আরো জানান, আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে বাজারের ব্যবসায়ী
দাবি করছে। কিন্তু সে আমাদের হিঙ্গাজিয়া বাজারের ব্যবসায়ী নয়। কিছুদিন
পূর্বে বাজারে একটি দোকান কোঠা ভাড়া নিয়েছে। তবে সেখানে এখনো কোন ব্যবসা
শুরু করেনি। তার পাওয়ার ট্রিলার রয়েছে। এছাড়া তার কোন ব্যবসা নেই। সে ওই
এলাকায় সহযোগী নিয়ে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। এলাকার মানুষ
তার অত্যাচারে অতিষ্ট। ভয়ে কেউ তাকে কিছু বলতে পারেনা। এর আগে বাজারের
চারটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। পুলিশী তদন্তে ওই চুরির সাথে আলমগীরের
সম্পৃক্ততা পায়। এসব মামলায় সে এখনো নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছে।
এমনকি আলমগীর একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য রিয়াজ উদ্দিন,
হিঙ্গাজিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমজদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক বিনয়
ভূষণ সরকার, ভুক্তভোগী বদরুল হোসেন অপু, আব্দুল মোমিন, শামীম আহমদ
প্রমুখ।
অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন জানান,‘ তিনি একজন ফার্ণিচার ব্যবসায়ী। এর
পাশাপাশি তিনি মাছের ফিসারী, কৃষিকাজ ও ইট বালু পরিবহনে নিয়োজিত ট্রলি
গাড়ীর ব্যবসা করে থাকেন। সৎভাবে ব্যবসা করে ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায়
একই এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি তাকে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতি সাধনের জন্য নানা
ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার এসআই নৃপেশ দেব জানান, মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায়
আমরা আলমগীরের ট্রলি চালক রুবেলকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করি। তখন সে
জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মানিক মিয়ার সাইকেলটি আলমগীর চুরি করেছে। আলমগীরের
বিরুদ্ধে একাধিক চুরির মামলা রয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত শেষ করে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।