আগামী তিন বছরে সাড়ে চার লাখ শ্রমিক ইতালি। দেশটির শ্রমিক সংকট কাটাতেই বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৩৬টি দেশ থেকে তিন বছরে পর্যায়ক্রমে লোক নেয়ার কথা জানানো হয়েছে। সোমবার (৭ আগস্ট) স্থানীয় সময় দেশটির মন্ত্রী পরিষদ প্রাথমিকভাবে এ অনুমোদন দিয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশটির অর্থনীতিভিত্তিক সংবাদপত্র ‘ইল সোলে 24 ওরে’।
সংবাদ মাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশজুড়ে কর্মী সংকট এবং ভূমধ্যসাগরসহ অন্যান্য উপায়ে অবৈধভাবে ইতালিতে প্রবেশ বন্ধ করতে বর্তমান মেলোনি সরকার তিন বছর মেয়াদী এক বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে।
২০২৩ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বছরে ৪ লাখ ৫২ হাজার নন-ইউরোপিয়ান কর্মী নেয়া হবে। যার আবেদন শুরু হবে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে।
এর মধ্যে ২০২৩ সালে ইতালিতে প্রবেশ করতে পারবে ১ লাখ ৩৬ হাজার, ২০২৪ সালে ১ লাখ ৫১ হাজার এবং ২০২৫ সালে ১ লাখ ৬৫ হাজার নন-ইউরোপিয়ান কর্মী। এতে সিজনাল বা অস্থায়ীভাবে প্রবেশের জন্য আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ থেকে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে আবেদন করা যাবে। আর নন-সিজনাল বা স্থায়ীভাবে প্রবেশের জন্য পর্যায়ক্রমে একই মাসের ৫ ও ৭ তারিখ সকাল ৯টা থেকে আবেদন জমা শুরু হবে।
এই সাড়ে চার লাখ শ্রমিকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক নেয়া হবে কৃষিখাতে। ২০২৩ সালে ইতালিতে প্রবেশ করতে পারবে ১ লাখ ৩৬ হাজার বিদেশী কর্মী। এর মধ্যে সিজনাল ভিসায় আসতে পারবে ৮২ হাজার ৫৫০ জন আর নন-সিজনাল বা স্থায়ীভাবে আসতে পারবে ৫৩ হাজার ৪৫০ জন কর্মী। তবে সিজনাল ৮২ হাজার ৫৫০ জনের মধ্যে শুধু কৃষিখাতে আসতে পারবে ৪০ হাজার আর বাকিরা পর্যটন খাতে প্রবেশের অনুমতি পাবে।
২০২৪ সালে দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে ১ লাখ ৫১ হাজার কর্মী। এর মধ্যে ৮৯ হাজার ৫০ জন সিজনাল ভিসায় এবং ৬১ হাজার ৯৫০ জন নন-সিজনাল বা স্থায়ী ভিসায় আসতে পারবে। এছাড়া প্রকল্পের শেষ বছর ২০২৫ সালে দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে ১ লাখ ৬৫ হাজার কর্মী। এর মধ্যে ৯৩ হাজার ৫৫০ জন সিজনাল বা অস্থায়ী এবং নন-সিজনাল বা স্থায়ীভাবে ৭১ হাজার ৪৫০ জন কর্মী আনা হবে।
সিজনাল বা অস্থায়ী সেক্টর : কৃষি ও পর্যটননির্ভর আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট।
নন-সিজনাল বা স্থায়ী সেক্টর : বাস ও ট্রাকচালক (ড্রাইভিং লাইসেন্স যদি ইতালিতে ভ্যালিড থাকে), ডমেস্টিক সেক্টর, বৃদ্ধ ও শিশুদের দেখাশোনা, ইলেকট্রিশিয়ান, বিল্ডিং ও জাহাজ নির্মাণ শ্রমিক, পর্যটননির্ভর আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট, মেকানিক, টেলিকমিউনিকেশন, প্লাম্বার, সেলুনকর্মী, মাছ ধরার জেলে এবং আলিমেনটারি।
ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান বলেন, ‘বাংলাদেশি শ্রমিকদের দক্ষতা এখানে খুব জনপ্রিয়। আমরা ইতালির সরকারের সঙ্গে সবসময় আলোচনার মাধ্যমে আমাদের দেশ থেকে শ্রমিক আনার বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাব। প্রতিটি বাংলাদেশি যেন দেশটিতে সুনামের সঙ্গে কাজ করে এবং সব ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের বিরত রাখে। তাহলেই আমরা ধীরে ধীরে দেশটিতে আরো সুনাম অর্জন করতে পারব।’