আজ ৫ই অক্টোবর জাতীয় শিক্ষক দিবস। দিনটি শিক্ষক দিবসরুপে সমগ্র জাতির কাছে স্মরণীয়। ভারতের এক অন্যতম সাক, মহান শিক্ষক, ভারত-রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণের জন্ম দিনটি জাতির উদ্দেশ্য উৎসর্গকৃত হল। দিনটি চিহ্নিত হল ‘শিক্ষক দিবস রূপে’। সেই শিক্ষকদের মধ্যে একজন হলেন মোহাম্মদ শামসুল হক। তাঁর জন্ম ১৯৬৭ সালে কুলাউড়া উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার কারণে তাঁর অসংখ্য গুণমুগ্ধ ছাত্র ও ছাত্রী রয়েছেন।
জীবনের কোনো পরীক্ষাতেই প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হননি। তাঁর পিতা মাওলানা হাবিবুর রহমান যিনি ভারতের দেউবন্দ মাদ্রাসা থেকে কামিল পাস করেন। শামসুল হক ক্লাস ওয়ান থেকে ফাজিল পর্যন্ত লেখা পড়া করেন শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শ্রীপুর জালালীয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায়। পরবর্তীতে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা হতে স্কলারশিপ সহ কৃতিত্বের সাথে কামিল ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে, বি এ ডিগ্রি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে মেধা তালিকায় ১ম স্থানসহ এম এ ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি সদা সর্বদা স্বদেশ প্রেমের প্রতি জাগ্রত ছিলেন।
কর্ম জীবনে ১৯৮৬ সাল থেকে শ্রীপুর জালালীয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় ভাইস প্রিন্সিপাল থাকা অবস্থায় ১৯৯৫ সাল হতে উক্ত মাদ্রাসায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং ২০১৯ হইতে অধ্যক্ষ পদে কর্মরত আছেন। দীর্ঘ ৩৮ বছর থেকে উক্ত মাদ্রাসায় সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ১৯৯৪/ ১৯৯৬/ এবং ২০০১ সালে তিনবার সরকারি ভাবে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়ে পুরস্কার প্রাপ্ত হন। তাছাড়া ২০১৯ সালে মাদার তেরেসা এবং গোল্ডেন এওয়ার্ড এবং ২০২০ সালে শেরে বাংলা গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত হন।
বর্তমানে তিনি কুলাউড়া উপজেলার মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও মৌলভীবাজার জেলার জমিয়তুন মদাররিচিন এর সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এদিকে দীর্ঘ ২৪ বছর থেকে বিনা বেতনে ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর মাদ্রাসা বাজার জামে মসজিদ এবং সিংগুর আরাফা ঈদগাহে ইমামতি ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পারিবারিক জীবনে ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তাদের মধ্য ২ জন সরকারি চাকরি ও একজন ব্যবসা করে।
শিক্ষক শামসুল হক বলেন, একজন আদর্শ শিক্ষকের সম্মান কিন্তু কোনো দিনই কমে না । এমনকি মৃত্যুর পরও না । তবে এমন আদর্শ মানে পৌঁছাতে হলে অবশ্যই পরিশ্রম যেমন দরকার, তেমনই ত্যাগ স্বীকারও অপরিহার্য । আমার কর্ম জীবনে অনেকবার দেশ এবং বিদেশ থেকে চাকরির অফার পেয়েছি কিন্তু আমি আমার নিজ মাতৃভূমি ও নিজ এলাকার কথা চিন্তা করে আমার জীবনের শেষ কর্মদিবস পর্যন্ত এই মাদ্রাসায় থাকব। আমি আমার মাদ্রাসার সকল শিক্ষক ও কমিটির সকল এবং এলাকাবাসীর সকলের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করি।