শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
হাসিমপুর মাদ্রাসায় হামদ নাত ও ক্বেরাত প্রতিযোগিতা সম্পন্ন  ফ্রান্সে জুড়ী উপজেলা কমিউনিটি ট্রাস্ট গঠন সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন ও শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার কুলাউড়ায় হিউম্যানিটি রক্তদান সংস্থার শুভ সূচনা কুলাউড়ায় তালামীযে ইসলামিয়ার মীলাদুন্নবী (সা.) র‍্যালী অনুষ্ঠিত কুলাউড়ায় ভাগ-বাটোয়ারা না করে পারিবারিক প্রায় ৬০ কোটি টাকার যৌথ সম্পদ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানালেন মখলিছ মিয়া কুলাউড়ায় অনুষ্ঠিত হলো ‘ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে সিরাত সম্মেলন মৌলভীবাজার জেলা শিবিরের ইউনিয়ন দায়িত্বশীল সমাবেশ সম্পন্ন কুলাউড়ায় ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন অব নিউজার্সি’র উদ্যোগে নগদ অর্থ বিতরণ

কুলাউড়ায় গাঁজা বিক্রিতে সহায়তা না করায় প্রতিবন্ধী যুবককে মারধর

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট : শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৩

 

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় শারীরিক প্রতিবন্ধী এক যুবককে পেটালেন আব্দুল হামিদ নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। নির্যাতনের শিকার ওই প্রতিবন্ধীর নাম আকলিছ মিয়া (৩০)। গত বুধবার বিকেল ৩টায় উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের গফুর শাহ মাজারের ভেতরে ঘটনাটি ঘটে। আকলিছ উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের ঘাঘটিয়া গ্রামের হতদরিদ্র ছমদ মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিবন্ধী যুবকের পিতা ছমদ মিয়া স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল হামিদকে প্রধান আসামী ও তার দুই ছেলে শাহান মিয়া (২০) ও মিজান মিয়া (২২) কে অভিযুক্ত করে কুলাউড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রতিবন্ধী যুবককে বেধড়ক পেটানোর ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।


থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২৫ অক্টোবর বুধবার বিকেল ৩টায় উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের গফুর শাহ (রঃ) মাজারের সামনে ব্রীজের উপর বসা ছিল প্রতিবন্ধী যুবক আকলিছ মিয়া। এসময় ঘাঘটিয়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হামিদ প্রতিবন্ধী আকলিছকে গফুর শাহ মাজারে ডেকে নিয়ে কিছু গাঁজা দেন অন্যত্র বিক্রি করার জন্য। কিন্ত আকলিছ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হামিদসহ তার দুই ছেলে শাহান ও মিজান বেধড়ক মারপিট করে আকলিছকে। একপর্যায়ে হামিদ আকলিছের ডান হাতের দুই আঙ্গুলে সুই ঢুকিয়ে আঘাত করে। আর হামিদের ছেলে শাহান বৈদ্যুতিক শক দেয়। এছাড়া হামিদ ওই প্রতিবন্ধীর গলায় চাপ দিয়ে ধরে প্রাণে হত্যার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে প্রতিবন্ধী আকলিছকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।
জানা গেছে, আব্দুল হামিদ জয়চন্ডী এলাকায় প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। সে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। মাদক ব্যবসাই তার একমাত্র পেশা। এলাকায় তার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। নিরীহ লোকরা তার ভয়ে তটস্থ থাকতে হয়। প্রায় সময় যেকোন বিষয় নিয়ে এলাকার লোকদের সাথে মারধরে লিপ্ত হন আব্দুল হামিদ। মারধরের ঘটনায় কুলাউড়া থানায় তার বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে। এছাড়া জয়চন্ডী ইউনিয়নের স্থানীয় গফুর শাহ মাজারের দায়িত্বে রয়েছেন আব্দুল হামিদ। তিনি এই মাজারের ভেতর একটি আলাদা রুমে মাদকের রমরমা বাণিজ্য করে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এমনকি ওই মাজারের ভেতরের রুমে রাতে বিভিন্ন এলাকার অজ্ঞাত লোকের আনাগোনা রয়েছে।

প্রতিবন্ধী আকলিছের পিতা ছমদ মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী অসুস্থ মানুষ। অসুস্থ শরীর নিয়ে কোন রকম চলতে পারে। ঘটনার দিন আমার ছেলে গফুর শাহ মাজারের সামনে ব্রীজের উপর বসা ছিল। সেখানে তাকে দিয়ে গাঁজা বিক্রির কথা বলে। আমার ছেলে এলাকার প্রভাবশালী আব্দুল হামিদের কথা না শুনায় গাঁজা চুরির অপবাদ দিয়ে ডেকে নিয়ে মাজারের ভেতরে অমানবিক নির্যাতন চালায়। ছেলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে অনেক কষ্ট লাগছে।
প্রতিবন্ধী যুবককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল হামিদ বলেন, গফুর শাহ মাজারের দায়িত্বে রয়েছি। মাজারে নির্মাণ কাজ চলছে। মাজারের খাদিম ওই প্রতিবন্ধীর কাছে চাবি দিয়েছিলেন আমাকে দেয়ার জন্য। কিন্ত প্রতিবন্ধী আকলিছ আমাকে চাবি দেয়নি। ঘটনার দিন সকালে আমার চাচাতো ভাই ফোন করার আগে যদি কেউ প্রতিবন্ধীকে মারধর করে সেটা আমি জানি না। তবে আকলিছের পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। প্রতিবন্ধী যুবককে দিয়ে আমার প্রতিপক্ষরা এসব নাটক করাচ্ছে। মাদক ব্যবসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত নই।

জয়চন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রব মাহাবুব বলেন, প্রতিবন্ধী যুবককে মারধরের বিষয়টি আমি জেনেছি। গফুর শাহ মাজারকে কেন্দ্র করে মাদক ব্যবসার বিষয়টি স্থানীয় লোক মারফত জেনেছি। আইনী ব্যবস্থা নিতে আগামী আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করবো।
কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) ক্যশৈনু বলেন, প্রতিবন্ধী যুবককে মারধরে ঘটনায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ | কেবিসি নিউজ ফ্রান্স
Theme Developed BY NewsFresh