বাংলাদেশে ইতালির শ্রমভিসা ১৫ হাজার ইউরোয় (প্রায় ১৯ লাখ টাকা) বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি। সেই সঙ্গে মেলোনি হুশিয়ার করে বলেন, ভিসার অপব্যবহারের মতো দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে তার দেশ।
গত মঙ্গলবার ইতালির মন্ত্রিসভার এক বৈঠকের পর প্রকাশ করা ভিডিও বার্তায় মেলোনি বলেন, তার দেশের কূটনীতিকরা বাংলাদেশে শ্রমভিসা কেনাবেচার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে ইতালিতে আসা কর্মীদের সবচেয়ে বড় অংশ বাংলাদেশি। তারা ভিসা পেতে নানা ধরনের জালিয়াতি করছে।
বৈধভাবে ইটালী আসার ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে একটি অপরাধীচক্র বিদেশি কর্মীদের অবৈধভাবে দেশটিতে পাচার করছে । এ নিয়ে তদন্ত করা উচিত বলে মনে করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ।
২০২৩-২০২৫ সময়কালের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের নাগরিকদের শ্রমভিসার কোটা গত বছর বাড়িয়েছে ইটালী সরকার। এখন এই কোটা ৪ লাখ ৫২ হাজার। ২০১৯ সালে করোনা মহামারীর আগে ইতালি মাত্র ৩০ হাজার ৮৫০টি ভিসা ইস্যু করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভিসাগুলো তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে, কিছু অঞ্চল থেকে (বিশেষ করে কাম্পানিয়ার দক্ষিণাঞ্চল) সম্ভাব্য নিয়োগকর্তার সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে আবেদন করা হয়েছে। এত আবেদনের বিপরীতে কাজের ভিসা পাওয়া বিদেশিদের মধ্যে খুব কমসংখ্যক কাজের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। কাম্পানিয়াতে এর হার ৩ শতাংশেরও কম। এই ঘটনাই প্রমাণ করে যে, সংগঠিত অপরাধচক্র প্রায় ১৫ হাজার ইউরোর বিনিময়ে ইতালিতে প্রবেশের অধিকার নেই, এমন অভিবাসীদেরও ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদনের ব্যবস্থা করেছে। এ অবস্থায় আগামী ১৩ থেকে ১৫ জুন ইতালিতে জি সেভেনের শীর্ষ সম্মেলনের পর এই অনিয়ম রোধে নতুন ব্যবস্থা পাসের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবে মেলোনির সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান শ্রম ঘাটতি পূরণের জন্য নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে। ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত সমুদ্রপথে ইতালিতে পৌঁছানো অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা ২১ হাজার ৫৭৪ জন। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ সংখ্যা অর্ধেকেরও কম।