মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রবাসী পরিবারের বাড়ির জমি দখল করার চেষ্টা ও মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন শীর্ষক ৬ জানুয়ারি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেছেন মাহমুদ আলী নামের এক দুবাই প্রবাসী। তিনি বলেন, কুলাউড়া পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের উছলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মরহুম মনা উল্লাহ’র ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে সন্তান রয়েছে। সন্তানরা হলেন, জুবেদা বেগম, ইদ্রিস মিয়া, কনাই বিবি, চটই মিয়া ও শানু বেগম। তন্মধ্যে ছেলে মরহুম চটই মিয়া নিঃসন্তান। প্রবাসী মাহমুদ আলী হলেন মনা উল্লাহ মেয়ে শানু বেগমের নাতি। শানু বেগমের মেয়ে রয়ফুল বেগমের ছেলে মাহমুদ আলী বলেন, আমার মাতামহী মনা উল্লাহ’র নাতি সোলেমান আহমদ ও লোকমান হোসেন যেভাবে মৌরসী সম্পত্তির দাবিদার আমরাও ঠিক একইভাবে দাবিদার। আলালপুর মৌজায় মোট ৯টি দাগে ৩২৭ শতক জমি রয়েছে। তন্মধ্যে আমার নানি শানু বেগমের উত্তরসূরী হিসেবে আমার মাতা রয়ফুল বেগম, খালা করফুল বেগম ও মামা মৃত দুলাল মিয়া কুলাউড়ার পৌর এলাকার আলালপুর মৌজায় ২৩৩ ও ২৩৭ দাগে মোট ৪৬ শতক জমির মালিক। অথচ ওই জমি জবর দখল করে রেখেছে উছলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুলতান আহমদ গং।
মৌরসী সূত্রে জমির রেকর্ডে আমার মাতা রয়ফুল বেগমের নামে ৭ শতক, খালা করফুল বেগমের নামে ৭ শতক ও মামা মরহুম দুলাল মিয়ার নামে ১৪ শতক রয়েছে। আর মৌরসী জমি ভাগ-বাটোয়ারা হলে আমরা ৪৬ শতক জমির মালিক হই।
অথচও অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, গত ৬ জানুয়ারি উছলাপাড়া এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে লোকমান হোসেনের ছেলে কাওসার আহমদ সানি গণমাধ্যমকে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা ও বানোয়াট। তাদের বক্তব্য সঠিক নয়। তাদের বক্তব্য আইনবিরোধী। সরকারের সেটেলমেন্ট বিভাগ যেখানে আইনী প্রক্রিয়ায় ওয়ারিশ অনুযায়ী আমার মা রয়ফুল বেগম, খালা করফুল বেগম ও মামা মরহুম দুলাল মিয়ার নামে ২৮ শতক জমি রেকর্ড সম্পাদন করেছেন। অথচ তারা এখন বলতেছে, আমরা নাকি ওই মৌরসী জমি জোরপূর্বক দখল করতে চাচ্ছি। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন মনগড়া কথা তাদের তারা উল্টো আমাদের রেকর্ডীয় ভূমি দখল করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে আমাদের ভূমিতে আমরা কৃষিক্ষেত করতে চাইলে তারা সংঘবদ্ধ ভাবে আমাদের উপর আক্রমণ করেন। আমরা আমাদের মৌরসী ভূমিতে যেতে চাইলে আমাদের বার বার বাধা প্রদান করেন তারা এমনকি গত ১০ অক্টোবর আমি দেশ থেকে প্রবাসে চলে আসি। তারপরও সুলতান আহমদ গং গত ১৬ অক্টোবর মিথ্যা মামলা দিয়ে আসামী করেছে। প্রবাসে থাকার পরও কিভাবে আমি মামলার আসামী হলাম।
এদিকে আমার মামা মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে রুবেল আহমদ এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গত ৫ আগস্টের পর কুলাউড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সেনাবাহিনীর কুলাউড়া ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন বরাবরে পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করে। এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন আমাদের ও প্রতিপক্ষকে সুলতান আহমদ গংকে নিয়ে তাঁর কার্যালয়ে শুনানী করেন। শুনানীতে সুলতান গংরা কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ৪৬ শতক জমির প্রকৃত মালিকদের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। ওইসময় শুনানীতে সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও বাড়িতে এসে খুবই চতুর লোক সুলতান আহমদ এসিল্যান্ডের সিদ্বান্ত অমান্য করেন। আমরা জমি পরিমাপ এবং সাইনবোর্ড টাঙ্গানোর জন্য গেলে সুলতান আহমদ নেতৃত্বে নারী পুরুষসহ ১২-১৩ সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। এসিল্যান্ডের নির্দেশনা না শুনে সুলতান গং মৌলভীবাজার আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত মিথ্যা মামলাটি একদিনের শুনানীতে খারিজ করে দেন।
প্রতিপক্ষরা আমাদের মৌরসী জমিতে কাজ করতে আসলে আমাদের পরিবারের কেউ বাধা নিষেধ দিলে তারা যেকোন সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে। আমরা প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের মৌরসী সম্পত্তি উদ্ধারে যেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদান করা হয়।
মাহমুদ আলী ও রুবেল আহমদ, গ্রাম বাদেমনসুর কুলাউড়া পৌরসভা।