মহি উদ্দিন রিপন : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর, নৃশংশ হামলা, গণহত্যা ও ভারতে ওয়াকফ বিল পাশের প্রতিবাদে কুলাউড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতি বেনজামিন নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
জাতীয়তবাদী দল বিএনপি উপজেলা, পৌর ও অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে ৮ এপ্রিল সোমবার মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল পৌর শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহরের দক্ষিণবাজারস্থ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে নেতাকর্মীরা ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন, ফিলিস্তিন’, ‘বয়কট বয়কট, ইসরায়েল বয়কট’; ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, ‘ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে,’ ‘নেতানিয়াহুর দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘মোদির দুই গালে জুতা মারো তালে তালে,’ ‘ইসরায়েলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এড. আবেদ রাজা। এড. আবেদ রাজা বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ ঘুরে গিয়েছেন। এই একটি রাষ্ট্র গোটা পৃথিবীকে অশান্ত করে রেখেছে। আন্তর্জাতিক মহল ও মুসলিম বিশ^কে বলতে চাই, পৃথিবী থেকে ইসরায়েলকে অবাঞ্চিত করতে হবে। মানবতার জয়গান, ফিলিস্তিনের জয়গান নিশ্চিত করতে হবে। ইসরায়েলী ও ভারতীয় পন্য বয়কট করতে হবে। এমনকি ভারতীয় পন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবেনা। সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কোন বিশৃঙ্খলা না করে ইসরায়েলি ও ভারতীয় পন্য সরাতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করতে হবে।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খান, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল জলিল জামাল, সদস্য জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, শামীম আহমদ চৌধুরী, এম এ মজিদ, বদরুজ্জামান সজল, ময়নুল হক বকুল, আবু সুফিয়ান, কমর উদ্দিন কমরু, আব্দুল মুক্তাদির মুক্তার, আব্দুল মুক্তাদির মনু, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মান্নান, সদস্য হারুনুর রশীদ,কায়সার আরিফ, শামীম আহমদ, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সুলতান আহমদ টিপু প্রমুখ। এসময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা আরো বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যা সকল মানবতা ও নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এই বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জিহাদ অনিবার্য হয়ে উঠেছে। বারবার যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লঙ্গন করে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়ে নিরীহ নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ শতশত অসহায় মুসলমানকে নির্বিচারে হত্যা করছে। এমনকি হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত এই হায়েনাদের হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেনা। এমনকি বিগত রমজান মাসেও হামলা থেকে রেহাই পায়নি গাজার নিরীহ মানুষেরা। আমেরিকার মতো যেসব দেশ এমন গণহত্যা দেখে নিশ্চুপ তাদেরও বয়কট করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলো কাপুরুষতার পরিচয় দিচ্ছে, যার জন্যই সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক মুসলিম সংস্থা ও বিশে^র মুসলিম নেতাদের এই নিরবতা ইসরায়েলিদের দাসত্বের সামিল। বিশ^ মানবতার এই দুর্যোগমময় মুহূর্তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিপিড়ীত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে হবে। নিরবতা ভেঙ্গে গণহত্যা ও যুদ্ধ বিরতি লঙ্গনের দায়ে নেতানিয়াহু সরকার, ইসরায়েল ও তাদের দোসরদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আমরা জাতিসংঘ, বিশ্বের মানবতাকামী সংগঠনের প্রতি আহবান জানাই, অচিরেই ইসরায়েলকে বয়কট করুন। পাশাপাশি ইসরায়েলের সকল পণ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কটের দাবি জানান এবং অনতিবিলম্বে মুসলিম দেশগুলোকে এক কাতারে এসে এই গণহত্যার প্রতিবাদ করার আহবান জানান তারা।