অবশেষে প্রাণ ফিরছে অস্তিত্ব সংকটে ভরাট হওয়া রবিরবাজারের কাঁচা বাজারের সেই পুকুরটির। কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজারে কাঁচাবাজার-সংলগ্ন পুকুরটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল। দীর্ঘদিন থেকে কাঁচাবাজারের ময়লার কারণে পুকুরটি ভরাট হয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে। ভরাট হওয়া সেই পুকুরটি নিয়ে অনেক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে তিন লক্ষ টাকার একটি
প্রকল্পে পুকুর খননের কাজ শুরু হয়েছে।
২২ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দুপুরে কুলাউড়ার রবিরবাজার কাঁচা বাজার সংলগ্ন ৩৬
শতকের অস্তিত্ব সংকটে থাকা সেই পুকুরটি খনন কাজের উদ্বোধন করেন কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন, পৃথিমপাশা ইউপি চেয়ারম্যান জিমিউর রহমান চৌধুরী, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন, ইউপি সচিব সজল কুমার দেব, ইজারাদার দীপক দে প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, পুকুর ও জলাশয়, খাল-নদী ভরাটে আমাদের পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। রবিরবাজারের পুকুরটি খননের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এখানে ঘাটলা, গার্ড ওয়াল ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হবে। পুকুরটি যাতে পুনরায় প্রাণ ফিরে পায় সেজন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সকলকে সচেতন হতে হবে। জলাশয়ে কোন ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। উল্লেখ্য যে, রবিরবাবাজার ও কাঁচাবাজারে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দুই হাজারের অধিক দোকানপাট রয়েছে। বাজারের মাঝখানে ছয়ত্রিশ শতাংশ জায়গাজুড়ে পুকুরটির অবস্থান।
আগে নানা কাজে স্থানীয়রা পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। তদারকি না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে ময়লা ফেলে ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছিল পুকুরটি। দুর্গন্ধ ও দূষণ ছড়াচ্ছিল চারদিকে। পুকুরের ঘাটও দখল করে দোকান বসানো হয়েছিল। বাজারের ভিতরে কোন ডাস্টবিনের সুবিধা না থাকায়
ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনা পুকুরে ফেলতেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যার প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের নজরে বিষয়টি আসলে এলজিইডি’র মাধ্যমে তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে পুকুর খননের কাজ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মনু মিয়া, আনোয়ার আলী, ইনাম উদ্দিন, ইউসুফ আলী জানান, আগে বাজারের ব্যবসায়ীরা পুকুরে অজু, গোসল ছাড়াও সবজি পরিষ্কার করতেন। বর্তমানে এই পুকুরে কোনো পানিই নেই, আছে শুধু ময়লা আর আবর্জনা। বাজারের ভেতরে কোনো ডাস্টবিন না থাকায় লোকজন ময়লা-আবর্জনা ফেলে পুকুরটিকে ডাস্টবিনে পরিণত করেছেন। বর্তমানে পুকুরটি খনন করে ব্যবহার উপযোগী করে তুলে সাধারণ মানুষ এতে উপকৃত হবেন এবং কোন সময় বাজারে কোন অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটলে পুকুরের পানি তাতে ব্যবহার করা যাবে।